নিঝুমদ্বীপ জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বঙ্গোপসারের উপকূলবর্তী নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় অবস্থিত । নিঝুমদ্বীপ একটি আদর্শ প্রকৃতি পর্যটণ এলাকা। প্রতিবছর হাজার হাজার প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটক এখানে আসেন এর সৌন্দর্য উপভোগের জন্য। সরকার ২০০১ সনে নিঝুমদ্বীপকে ‘জাতীয় উদ্যান’ ঘোষনা করেছেন যাতে এর মাধ্যমে এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সাথে সাথে প্রকৃতি পর্যটণের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা যায়।
এলাকাটি নোয়াখালী জেলা শহর হতে ৯০.০ কিঃমিঃ দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং হাতিয়া উপজেলা সদর হতে ৩১.০ কিঃমিঃ দক্ষিণ দিকে বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত। এর উত্তরে ও পূর্বে মেঘনা নদী, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমে শাহবাজপুর নদী ও বঙ্গোপসাগর। আয়তনঃ ১৬,৩৫২.২৩ হেক্টর। এলাকাটি বিভিন্ন খাল দ্বারা বেষ্টিত। খালসমূহে সারা বছর জোয়ার-ভাটার পানির প্রবাহ থাকে ।
এখানে রয়েছে কেওড়া, বাইন, পশুর, কাঁকড়া, ঝাউ, আকাশমনি, কড়ই, জাম, মেহগিনি, শিমুল, তেতুল, ছাতিয়ান, অর্জুন, নিম, কদম, ছন, মান্দারু, হিজল, বাঁশ, বট, সোনালু, আসাম লতা, স্বর্ণলতা, নারিকেল, তাল, খেজুর, সুপারী, আমলকি, উরিআম, পেয়ারা, গোলপাতাসহ অসংখ্য প্রজাতির গাছ-গাছড়া । এলাকাটিতে হরিণ, শুকর, শিয়াল, বাদুর, বন্য কুকুর, বেজি, বাগডাশা, মেছোবাঘ, চামচিকা, গুইসাপ, কাঠবিড়ালী, অজগর সাপ, হলদে পাখি, বাবুই, পেঁচা, বউ কথা কও, চিল, শালিক, শ্যামা, টুনটুনি, ঘুঘু, মাছরাঙা, সাদাবক, ডাহুক, দোয়েল, বুলবুলি, বক, গাংচিল, কোয়াজ কবুতর, ইত্যাদিসহ অসংখ্য প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে আই.ইউ.সি.এন এর তালিকা অনুসারে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি হিসেবে চিিহক্ষ্মত রয়েছে।
সড়ক পথে নোয়াখালী জেলা শহর থেকে বাস/প্রাইভেট কার যোগে চেয়ারম্যানঘাট হতে সি-ট্রাক/লঞ্চ/ট্রলার যোগে চেংগা/নলচিরাঘাট/তমরুদ্দিনঘাট যাওয়া যায়। তথা হতে বেবিট্যাক্সি/জীপ/ কোষ্টার/মোটরসাইকেল (হেলিকপ্টার) যোগে মুক্তারিয়াঘাট এবং সেখান হতে ইঞ্জিনবোটে বন্দরটিলাঘাট ; তথা হতে পদব্রজে, রিক্সা এবং মোটর সাইকেল যোগে ন্যাশন্যাল পার্কে পৌঁছা যায়। তমরুদ্দিনঘাটও চর চেংগা ঘাট হতে ট্রলার/ইঞ্জিনবোট যোগে সরাসরি ন্যাশন্যাল পার্কে যাওয়া যায় । পিকনিক কর্নার, প্যাডেল বোট, দৃষ্টি নন্দন লেক, ফুট ট্রেইল, কিল্লা, সুপেয় পানির পুকুর ও সমুদ্র সৈকত। এছাড়া পর্যটকদের অবস্থানের জন্য অবকাশ পর্যটন, নামার বাজারে রয়েছে জামে মসজিদ বোর্ডিং এবং বন্দরটিলায় রয়েছে সিডিএসপি বিল্ডিং ও হোটেল শেরাটন ।