বন বিভাগ পরিচালিত সামাজিক বনায়ন কার্যক্রমের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী নির্বাচনে সমাজের দুঃস্থ মহিলাদেরকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হচ্ছে। উপকারভোগী ব্যক্তি বিবাহিত পুরুষ হলে তার স্ত্রীকেও উপকারভোগীর মর্যাদা প্রদান করা হচ্ছে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে সরকারি বনভূমিতে বনায়নের জন্য উপকারভোগী নির্বাচনের কমিটিতে আবেদনকারী জনগোষ্ঠীর ৫০% নারী প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়েছে। সমগ্র দেশে সামাজিক বনায়নের লভ্যাংশ প্রাপ্ত মোট ১,৩৩,০৮০ জন উপকারভোগীর মধ্যে প্রায় ৩০% নারী উপকারভোগী রয়েছেন। যশোর, পটুয়াখালী, জামালপুর ও কুমিল্লা জেলার কোন কোন সামাজিক বনায়নে ১০০% উপকারভোগী নারী সদস্যদের মধ্যে হতে নির্বাচন করা হয়েছে।
সমগ্র দেশের ১৬ টি রক্ষিত এলাকায় সহ-ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের ২০% নারী সদস্যের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। যারা কাউন্সিল সভায় সক্রিয় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করছেন। রক্ষিত এলাকার জন্য গঠিত পিপলস ফোরামের (PF) ৫০% বা ৭৩৩ টি পদ নারী সদস্যের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। রক্ষিত এলাকার সংলগ্ন গ্রামবাসীদের মধ্যে হতে ভিলেজ কনজারভেশন ফোরামের (VCF) এক তৃতীয়াংশ ৩৩% সদস্যপদ নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। ফলে ১৬,২৪০ জন নারী ভিলেজ কনজারভেশন ফোরাম সদস্য গ্রামবাসীকে বন সংরক্ষণ বিষয়ে প্রেরণা জোগানোর কাজ করছেন।
রক্ষিত এলাকা পাহারার জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে থেকে গঠিত কমিউনিটি পেট্রল গ্রুপেও নারী সদস্য অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। টেকনাফের মিসেস খুরশিদা বেগম বন পাহারায় নেতৃত্ব দিয়ে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা প্রদত্ত ওয়াঙ্গারী মাথাই পুরষ্কার অর্জন করেছেন। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
সামাজিক বনায়নে নার্সারিতে চারা উৎপাদন, পরিচর্যা, বাগান পরিচর্যা ইত্যাদি কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি এবং আত্মনির্ভরশীল করা হয়ে থাকে। এছাড়া সামাজিক বনায়ন বিধিমালা (২০০৪) অনুযায়ী ৩০% দুঃস্থ নারী উপকারভোগী হওয়ায় সুযোগ পেয়ে থাকেন। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উদ্যোগে গৃহীত সামাজিক বনায়ন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের অন্ততঃ দুইজন নারী থাকেন। বিধি ৭ এর (১) উপবিধিতে চুক্তির আওতায় উপকারভোগীর দায়িত্ব, কর্মব্যবস্থাপনা এবং সুবিধা এর ক্ষেত্রে স্ত্রী ও স্বামীকে সমান অধিকার অর্পণ করা হয়েছে। সামাজিক বনায়নের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০% নারীকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে। রক্ষিত এলাকা সহ-ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১৭ অনুযায়ী গ্রাম সংরক্ষণ দল, পিপলস্ ফোরাম, সহ-ব্যবস্থাপনা সাধারণ ও নির্বাহী কমিটির প্রতিটি পর্যায়ে এবং দাপ্তরিক পদমর্যাদায় নারীর অবস্থানকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তাছাড়া বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে নীতিমালা অনুযায়ী নারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করা হয়ে থাকে।
দশেজুড়ে হাজারো প্রান্তকি নারীকে সহযোগীতামূলক বন ব্যবস্থাপনা র্কাযক্রমরে আওতায় এনে পরবিশে সংরক্ষণরে পাশাপাশি তাদরে জীবনমান পরর্বিতনরে মাধ্যমে সুন্দর ও স্বাবলম্বী জীবনের স্বপ্ন বোনায় সহায়তা করছে বন অধিদপ্তরের সুফল প্রকল্প।