বাংলাদেশের প্রথম ও দ্বিতীয় ন্যাশনাল কমিউনিকেশন (National Communication) প্রতিবেদন অনুয়ায়ী CO2 নিঃসরণের অধিকাংশই হয়ে থাকে জ¦ালানী খাত হতে এবং এর পরেই রয়েছে ভূমি ব্যবহার পরিবর্তন ও বনভূমি (Land use, Land-use change in forestry- LULUCF) খাত। বনভূমি খাতের ভূমির ব্যবহার পরিবর্তন রোধের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমানো ও গাছ লাগানোর মাধ্যমে বায়ুমন্ডল থেকে কার্বন অপসারণের সুযোগ রয়েছে। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে UN-REDD এর অংশীদার দেশ হিসেবে আত্ম-প্রকাশ করে। UN-REDD কর্মসূচি উন্নয়নশীল দেশগুলোকে REDD+ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে এবং ফলাফল ভিত্তিক অর্থ প্রাপ্তির জন্য UNFCCC এর প্রয়োজনীয় শর্তপূরণে সক্ষম করে তোলে।
REDD+ Readiness প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো Roadmap প্রণয়ন। বাংলাদেশে REDD+ Rediness Roadmap প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু সংখ্যক পরামর্শমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিলো। এই পরামর্শমূলক কর্মসূচিগুলো জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়। REDD+ Rediness Roadmap এর সর্বপ্রথম জাতীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ঢাকায় ২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর মাসে। এর উদ্দেশ্য ছিলো অংশীজনদের কার্যকর অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনটি টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ (Technical Working Group-TWG) গঠন করা যা দেশের Roadmap প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় কারিগরি সহায়তা প্রদান করবেঃ
TWG - Monitoring, MRV এবং REL/RL পদ্ধতি প্রণয়ন;
TWG - জাতীয় REDD+ কৌশল প্রণয়ন;
TWG - সামাজিক এবং পরিবেশগত রক্ষাকবচ প্রণয়ন;
ঢাকায় ২০১২ সালের ১৭ জানুয়ারী REDD+ Rediness Roadmap এর ২য় জাতীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১২ সালের ২৭ মার্চ REDD+ Rediness Roadmap এর ৩য় জাতীয় পরামর্শ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশের প্রধান প্রধান অংশীজনদের মধ্যে জাতীয় Roadmap খসড়া দলিলটি সম্বন্ধে জানানো, আলোচনা করা এবং চুড়ান্ত করা। একই সঙ্গে REDD+ কর্মসূচি যেসব বাস্তব বিষয়ের সম্মুখিন হতে পারে বা বিবেচনা করা প্রয়োজন সেগুলোকে ফোকাস করে আঞ্চলিক পরামর্শ সভা সমূহ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।
চিত্র: বাংলাদেশ REDD+ Roadmap পরামর্শ এবং অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া
২০১২ সালের মে মাসে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের কর্মশালার ভিত্তিতে একটি খসড়া REDD+ Rediness Roadmap প্রণীত হয়েছিলো। খসড়াটি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে পেশ করা হয় এবং জাতীয় REDD+ স্টিয়ারিং কমিটি ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে এটাকে অনুমোদন দেয়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার Rediness Preperation Proposal (R-PP) প্রণয়ন করে। প্রণীত R-PP এর মাধ্যমে বাংলাদেশে REDD+Rediness অর্জনের জন্য একটি পরিষ্কার পরিকল্পনা,বাজেট এবং সময়সূচি প্রণয়ন করা হয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে UN-REDD পলিসি বোর্ড R-PP অনুমোদন করে।