বাংলাদেশ বন বিভাগ উপকূলীয় চরাঞ্চলে সফল বনায়ন পদ্ধতির উদ্ভাবক। বন বিভাগ ষাটের দশক থেকে উপকূলীয় জেগে ওঠা চরে বনায়ন শুরু করেছে। এ বন কে প্যারা বন ও বলা হয়। উপকূলীয় চর বনায়ন প্রক্রিয়া বনজ সম্পদ সৃষ্টির পাশাপাশি উপকূলবাসীকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা এবং সাগর থেকে ভূমি জেগে ওঠার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে । বনায়নের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগর থেকে ১ হাজার ৬০০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ভূমি দেশের মূল ভূ-খন্ডের সাথে যুক্ত হয়েছে। উপকূলীয় চরাঞ্চলে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ হেক্টর উপকূলীয় নতুন জেগে ওঠা চরে বন সৃজন করা হয়েছে। উপকূলীয় চর বনায়নের প্রভাবে স্থায়ীত্ব অর্জন করায় উপকূলের ১,১২,০৬৩ একর জমি শস্য উৎপাদনের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। উপকূলীয় জনগণের জীবন ও সম্পদ প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা এবং দেশের মজুদ কার্বন সংরক্ষণের লক্ষ্যে উপকূলবর্তী জেগে ওঠা চরে সৃজিত বনের ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৩৮৮.৮৫ একর সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ।
অবস্থানঃ নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকা।
পরিমাণঃ এ বনের আয়তন ২ লক্ষ হেক্টর যা দেশের আয়তনের ১.৩৬%।
উদ্ভিদ প্রজাতিঃ কেওড়া, ছৈলা, বাইন, গোলপাতা ইত্যাদি।প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনের মতো এ বন জোয়ার-ভাটায় প্লাবিত হয়।
বন্যপ্রাণীঃ হরিণ, মেছোবাঘ, শিয়াল, বানর, বনবিড়াল, বালিহাঁস ইত্যাদি।
মৎস্য সম্পদঃ এ বন উপকূলীয় মৎস্য ভান্ডারেরও একটি বিরাট উৎস। ভিটকি, পারসে, গলদা চিংড়ি, বাগদা চিংড়ি ইত্যাদি মাছ ও কাঁকড়া পাওয়া যায়।