Wellcome to National Portal
বন অধিদপ্তর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক

 

সীতাকুন্ড অপরূপ প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের লীলাভূমি। এ এলাকা শুধু হিন্দুদের বড় তীর্থস্থানই নয় খুব ভাল ভ্রমনের স্থানও বটে। সীতাকুন্ডের পূর্বদিকে চন্দ্রনাথ পাহাড় আর পশ্চিমে সুবিশাল সমুদ্র।  যে সকল ভ্রমনকারী প্রকৃতিকে ভালবাসেন প্রকৃতিকে খুব কাছের থেকে উপভোগ করতে চান তারা অবশ্যই সীতাকুন্ডে আসতে হবে। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৩৮ কি মিঃ উত্তরে এবং সীতাকু- বাজার থেকে ৪ কি.মি. পূর্বে চন্দ্রনাথ পাহাড় অবস্থিত। আপনি পায়ে হেঁটে অথবা রিক্সায় চড়ে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যেতে পারেন। কিন্ত পায়ে হেঁটে ভ্রমনের মজাই আলাদা, কারণ চন্দ্রনাথ পাহাড় শ্রেণীভূক্ত ছোট পাহাড় গুলো ব্যাসকুন্ড থেকে শুরু হয়েছে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাবার পথে হিন্দুদের কিছু ধর্মীয় স্থাপনাও আপনার চোখে পড়বে। এই এলাকা বিভিন্ন ধরনের গাছ, বুনফুল এবং গুল্মলতায় পরিপূর্ণ। বোটানি এবং জীববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা প্রকল্পের কাজের জন্য প্রায়ই এখানে আসেন। এখানে পেয়ারা, সুঁপাড়ি, আম সহ বিভিন্ন ফলের বাগান আছে। এখানে কিছু নৃতাত্বিক জন গোষ্ঠীর মানুষও বসবাস করে, যারা ত্রিপুরা নামে পরিচিত এবং এখানে তাদের কিছু গ্রামও আছে। পাহাড়ের গভীরে গেলে পাহাড়ের গায়ে ফসলের চাষ অর্থ্যাৎ জুমচাষ দেখা যায়; গভীর পাহাড়ের ভেতরে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করা ফুলের বাগানও দেখা যায়। এখানে অনেকগুলো ঝর্ণা আছে তবে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাবার পথে শুধু একটি মাত্র ঝর্ণা দেখা যায়, এস্থান থেকেই পাহাড়ে উঠার পথ দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। ডান দিকের রাস্তা প্রায় পুরোটাই সিঁড়ি আর বামদিকের রাস্তাটি পুরোটাই পাহাড়ী পথ, কিছু ভাঙ্গা সিঁড়ি আছে। বাম দিকের পথ দিয়ে উঠা সহজ আর ডানদিকের সিঁড়ির পথদিয়ে নামা সহজ। এখানে সীতা মন্দিরের কাছে আরও একটি ঝর্ণা আছে তবে এটা শুকিয়ে গেছে, অন্যঝর্ণা গুলো গভীর বনের মধ্যে অবস্থিত। 


সারা বছর জুড়েই অসংখ্য দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আনাগোনায় এই স্থানটি মুখরিত থাকে। এখানে পর্যটকদের গাড়ি রাখার জন্য বিশাল একটি মাঠ রয়েছে। তবে এখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির বড়ই অভাব। সেজন্য পর্যটকদের সাথে করে খাবার পানি নিয়ে যেতে হয়। প্রতি বছর বাংলা ফাল্গুন মাসে (ইংরেজী ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাস) বড় মেলা হয় যা শিবর্তুদশী মেলা নামে পরিচিত। এ সময় দেশ-বিদেশের অনেক সাধু সন্ন্যাসী এবং নর-নারী বিশেষ করে ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা থেকে এখানে আসেন। এ সময় এই এলাকা প্রচুর জনাকীর্ণ হয়ে উঠে। এটি একটি ভাল পিকনিক স্পট, সাধারণত নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক পিকনিক অথবা ঘুরতে এখানে আসে। এখানে ব্যাসকু-ের পাশে একটি বিশাল মাঠ আছে যা গাড়ী রাখা, রান্না করা সহ বিভিন্ন কাছে ব্যবহার করা যায়। তবে এখানে খাবার পানির কোন সুব্যবস্থা নেই আপনাকেই খাবার পানির ব্যবস্থা করতে হবে অথবা দোকান থেকে বোতলজাত পানি কিনে খেতে হবে। 


সড়ক পথে ঢাকা থেকে বিআরটিসি এর বাসগুলো ছাড়ে ঢাকা কমলাপুর টার্মিনাল থেকে। আর অন্যান্য এসি, ননএসি বাস গুলো ছাড়ে সায়দাবাদ বাস ষ্টেশন থেকে। আরামদায়ক এবং নির্ভর যোগ্য সার্ভিস গুলো হল এস.আলম ও সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক প্রভৃতি। সবগুলো বাসই সীতাকুন্ড থামে। 


রেলপথে ও বিমান পথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়া যায় এবং চট্টগ্রাম থেকে লোকাল ট্রেনে সীতাকুন্ড স্টেশন অথবা সড়ক পথে সীতাকুন্ড আসা যায়। এছাড়াও চট্টগ্রামের অলঙ্কার থেকে কিছু ছোট গাড়ী ছাড়ে (স্থানীয়ভাবে মেক্সী নামে পরিচিত) সেগুলো করেও আসা যায়।


সীতাকুন্ডতে কোন ভাল আবাসিক হোটেল নেই, তাই রাতে থাকতে হলে চট্টগ্রাম শহরে চলে যেতে হবে। কিন্তু এখানে ৬টি ধর্মশালা আছে যার ৩টি বাংলাদেশ রেলওয়ের যেগুলো ব্রিটিশ সরকার তৈরী করে ছিল। শিবর্তুদশী মেলার সময় এই ধর্মশালা গুলো ছাড়াও কিছু সাময়িক হোটেলে আগতরা থাকতে পারে।